গল্প- অমিতের কীর্তি

অমিতের কীর্তি
-সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়

 

 

গোস্বামী বাবুর খাদে মাছ ধরতে গিয়ে অমিতের মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরার খবরটা জানাজানি হতে বেশি সময় লাগলো না। খবরটা অমিতের বাবার কানেও পৌঁছলো। তিনি বিরক্ত হয়ে অমিতের মাকে বললেন, ‘ছেলেটা কি আরম্ভ করেছে বলতো, এইভাবে যেচে বিপদ ডেকে আনার কোন মানে হয়? পড়াশোনায় মতি নেই, শুধু পাড়ার ছেলেদের নিয়ে হল্লা করে বেড়াচ্ছে। কদিন বাদেই ফাইনাল পরীক্ষা, কি রেজাল্ট করবে বুঝতেই পারছি’। আসলে অমিতের বাবা অমিতের উপর একটু রেগেই ছিলেন। কদিন আগেই হাফ ইয়ার্লি পরীক্ষায় অমিতের রেজাল্ট মোটেই ভালো হয়নি, বিশেষ করে সংস্কৃতে। সংস্কৃত পরীক্ষায় প্রথমেই ছিল বাংলা থেকে সংস্কৃতে অনুবাদ, আর তার প্রথমটা ছিল ‘হরিণেরা সরোবরে জল পান করছে’ দেখেই তো অমিতের মাথা খারাপ। একে সবসময় পন্ডিত মশায়ের ক্লাসে ফাঁকি দিয়ে এসেছে, তার উপর যে দু’ একটা মুখস্থ করে এসেছে তার একটাও আসেনি। কিন্তু কি আর করা যাবে, কিছু তো লিখতে হবে। অগত্যা অমিত লিখতে আরম্ভ করলো ‘হরিন্যাং সরবরাং জলং’ ইত্যদি ইত্যাদি। মানে সব বাংলা শব্দের পিছনে একটা করে অং বা অ্যাং। কপাল গুনে সেদিন অমিতদের ঘরে পন্ডিত মশাই নিজেই গার্ড ছিলেন। ঘরে পায়চারি করতে করতে তাঁর হঠাৎ অমিতের খাতার দিকে নজর গেল, আর অমিতের অনুবাদ দেখে তো তাঁর ভিরমি খাওয়ার জোগাড়। তিনি অমিতের পাশে এসে বললেন, ‘বাপ, ব্রাহ্মণ সন্তান, একটু আধটু সংস্কৃত জ্ঞান না থাকলে কি চলে? খাতা দেখবো আমি, এই সব লিখে তো আমার হাতে ফেল করবি বাপ, তারপর সেই রাগ এসে পরবে আমার উপর’। আসলে ঘটনাটা হয়েছিল আগের পরীক্ষার পর। পরীক্ষা হয়ে গেছে রেজাল্ট তখনও বেড়োয়নি। অমিত একদিন সাইকেল নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে গেছে স্টেশনের দিকে। হঠাৎ পন্ডিত মশায়ের সঙ্গে দেখা। তিনি কোথাও গিয়েছিলেন, বাড়ি ফিরছেন, সঙ্গে রাজ্যের পোঁটলা পুঁটলি। অমিতকে দেখে বললেন, ‘যাক বাবা যাক, ভালো হয়েছে তোর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল, আমাকে বাড়ি দিয়ে আসবি চ, নাহলে এতো রাস্তা আমাকে হেঁটে ফিরতে হবে’। স্টেশন থেকে পন্ডিত মশায়ের বাড়ি প্রায় চার মাইল। অমিতের ইচ্ছা ছিল না মোটেই, কিন্তু কি আর করে, পন্ডিত মশাই বলে কথা, তার উপর ভীষণ রাগী। না বললেই হয়তো চেঁচিয়ে উঠবেন, ‘ওরে অকাল কুষ্মান্ড, গুরু বাক্য অমান্য করছিস’! অগত্যা অমিত ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালো। পন্ডিত মশায়ের ওজন বেশি নয়, সাকুল্যে হয়তো চল্লিশ কেজি হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তাঁর পুঁটলি নিয়ে। নয় নয় করে খান পাঁচেক তো হবেই। পন্ডিত মশাই সাইকেলের রডে উঠে বসলেন, আর পুঁটলিগুলো, কটা সাইকেলে বাঁধা হলো আর কটা তিনি হাতে নিলেন। অমিত সাইকেল ছাড়লো। সমস্যা হলো স্টেশন থেকে এগিয়ে এসে প্রথম যেখানে রাস্তাটা ঘুরেছে, সেইখানে রাস্তা ঘুরলেও হ্যান্ডেলের ফাঁকে পন্ডিত মশায়ের পুঁটলি ঢুকে যাওয়ায় সাইকেল আর ঘুরলো না। অমিত পন্ডিত মশাই সমেত সাইকেল নিয়ে সোজা মাঠে নেমে গেল, তারপর টাল সামলাতে না পেরে চিৎপাত। পড়ে গিয়ে পন্ডিত মশাই আর্তনাদ করে উঠলেন, ‘মেরে ফেললে রে, মেরে ফেললে…’ তারপর অমিত তাঁকে যাহোক করে টেনে তুলতেই তিনি আবার বলতে শুরু করলেন, ‘বাবা, তুই কি করে জানতে পারলি বল, কি করে জানতে পারলি’? অমিত তো আকাশ থেকে পড়লো, কিছুই বুঝতে পারছে না। পন্ডিত মশাই বলে চললেন, ‘পরীক্ষার খাতায় কিছু না লিখলে কি করে নম্বরটা দেবো বাবা? আমার হাতে ফেল করেছিস জানতে পেরে আমাকে মেরে ফেলার তাল করছিস? কি দস্যি ছেলে রে বাবা’! অমিতের বুকটা ধড়াস করে উঠলো। তার মানে সংস্কৃত পরীক্ষায় সে ফেল করেছে! পন্ডিত মশাই আবার বললেন, ‘দাঁড়া বাবা দাঁড়া তোকে পাশ করিয়ে দিচ্ছি’। এই বলে তিনি হঠাৎ রাস্তার উপর বসে একটা পুঁটলি খুলে ফেললেন। অমিত অবাক হয়ে দেখলো তার মধ্যে তাদের পরীক্ষার খাতা। পন্ডিত মশাই তার মধ্যে থেকে বেছে বেছে তার খাতাটা বার করে নিলেন। অমিত দেখলো সে আটাশ পেয়ে ফেল করেছে। অমিতের মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। অবশ্য সেটা বেশিক্ষণের জন্য নয়। পন্ডিত মশাই সেই রাস্তার উপর বসেই তার খাতায় কি সব নম্বর টম্বর যোগ করে উপরে লিখে দিলেন আঠাশ প্লাস তিন একত্রিশ। দিয়েই বললেন, ‘দ্যাখ বাবা দ্যাখ, আটাশ পেয়েছিলি, আরও তিন নম্বর জুড়ে একত্রিশ করে দিলাম, এক নম্বর বেশি দিলাম বাবা, খুশি তো? এবার বাড়ি পৌঁছে দে বাবা, আর যেন ফেলে মারিস না’। অমিত কে আর পায় কে? সংস্কৃতটা নিয়েই চিন্তা ছিল, সেটা উতরে গেল। পন্ডিত মশাইকে সাইকেলে চাপিয়ে একটানে তাঁর বাড়িতে গিয়ে নামিয়ে দিল অমিত। বাড়ি পৌঁছে হাঁফ ছেড়ে পন্ডিত মশাই বললেন, ‘ঘরদোরটা একটু ঝাঁট দিয়ে দে বাবা’। অমিত দিয়ে দিলো। তারপর বললেন, ‘একটু খাবার জল তুলে দিয়ে যা বাবা’। অমিত তুলে দিলো। তারপর পন্ডিত মশাই বললেন, ‘যা যা, সামনে সপ্তাহে খাতা বেড়োবে তখন দেখে নিস খাতায় কি সব লিখেছিস। তারপর থেকে পন্ডিত মশাই অমিতকে আর খুব একটা বকাবকি করতেন না। তবে সেদিন পরীক্ষা হলে তিনি অমিতের কানটা মুলে দিলেন। অবশ্য তারপর পাশ করার মতো উত্তর বলে দিয়ে সে যাত্রায় অমিতকে বাঁচিয়েও দিয়েছিলেন। যাই হোক অমিতের বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন কিছুদিনের জন্য অমিতকে তার মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দেবেন। এখানে থাকলে পড়াশোনা করবে না, ফাইনাল পরীক্ষায় ফেল মারবে। অগত্যা অমিতের মামার বাড়ি যাত্রা। অমিতের মামার বাড়ি চুঁচুড়া শহরে। তখনকার চুঁচুড়া শহর কিন্তু আজকের মতো ছিল না। অনেক ফাঁকা, লোকজন কম, মানে আজকের গ্রামের থেকে একটু ভালো আর কি। অমিত তো মামার বাড়িতে গিয়ে থাকতে আরম্ভ করলো। গ্রামের বন্ধুদের সঙ্গে চিঠিতে যোগাযোগ। কয়েকমাস কেটেও গেল। অমিতের খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না। সে ওখানে গিয়েও দল পাকিয়ে ফেলেছে। বরং অসুবিধা হচ্ছে গ্রামের বন্ধুদের। অমিত নেই, সেরকম কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনাও ঘটছে না। একদিন সবাই মিলে যুক্তি করে, ‘ও কি করছে দেখে আয় তো’ বলে ছঙ্কুকে পাঠালো অমিতের মামার বাড়ি। ছঙ্কু গিয়ে পৌঁছলো অমিতের মামার বাড়িতে। তাকে দেখে অমিত তো ভীষণ খুশি, বললো, ‘কি রে বাড়িতে বলে এসেছিস তো? আজ কিন্তু তোকে ছাড়ছি না’। ছঙ্কু জানালো যে সে রাতটা ওখানেই কাটিয়ে পরের দিন ফিরবে। অমিত আনন্দে লাফাতে লাফাতে ছঙ্কুকে নিয়ে চললো শহর দেখাতে। ইমামবাড়া, ব্যান্ডেল চার্চ, মহসীন কলেজ, কোর্ট, সব দেখে তারা যখন ফিরলো তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে। অমিতের দিদিমা একটু রাগারাগি করলেন, ‘ছেলেটা এই প্রথম এলো, তাকে বাড়িতে দুদন্ড বসতে না দিয়ে চোরকি ঘোরা ঘুরিয়ে মারলি’। ছঙ্কু কিন্তু ভারি খুশি, সে গাঁয়ের ছেলে, এসব জিনিস সে আগে দেখেই নি। কিছুক্ষণ পরে রাতের খাবারের ডাক পরলো। খাওয়ার পর শোয়ার পালা। ছঙ্কু দেখলো অমিত দু’টো বালিশ বগলে করে বেড়িয়ে আসছে। ছঙ্কুর হাতে একটা বালিশ দিয়ে বললো, ‘ঘরে খুব গরম বুঝলি, চ একজায়গায় শুতে যাবো।’ আসলে তখন চুঁচুড়া শহরে ইলেক্ট্রিসিটি থাকলেও সব বাড়িতে ইলেক্ট্রিসিটি পৌঁছয়নি। ছঙ্কু চললো অমিতের পিছু পিছু। কিছুক্ষণ হাঁটার পর তারা একটা নির্জন জায়গায় এসে পৌঁছলো। ছঙ্কু বুঝতে পারলো সেটা গঙ্গার ধার। একটা পোড়ো মন্দির আর একটা বিরাট বটগাছ। ছঙ্কু বললো, ‘এটা কোথায় এলাম রে দাদা’?(ছঙ্কু, উদ্দিনরা অমিতকে দাদা বলেই ডাকতো।) অমিত বললো, ‘এটা শ্মশানঘাট। শুনে ছঙ্কুর বুক ধড়াস করে উঠলো, ‘শ্মশানঘাটে শুতে হবে’! চারিদিক প্রায় অন্ধকার, একটা বাতিস্তম্ভে টিমটিম করে একটা বাতি জ্বলছে, তাতে যেন অন্ধকার আরও বেড়ে গেছে, চারিদিকে জনমনিষ্যি নেই, ভয়টা যেন ছঙ্কুকে আস্তে আস্তে চেপে ধরতে লাগলো। অমিত বললো, ‘তুই মন্দিরের রোয়াকটায় শুয়ে পর আমি গাছতলার বেদিটায় শুচ্ছি। বলেই অমিত বালিশ মাথায় দিয়ে শুয়ে পড়লো। ছঙ্কুও শুলো, কিন্তু দু’চোখের পাতা এক করতে পারে না। একবার পেঁচা ডাকে তো চমকে ওঠে, একবার হাওয়ায় বটগাছের ডালে মড়মড় আওয়াজ হয় তো চমকে ওঠে। তারই মধ্যে কখন একটু ঘুম ঘুম ভাব এসেছে হঠাৎ তার মনে হলো কেউ যেন ভিজে কাপড়ে তার পাশ দিয়ে ছপ ছপ করে হেঁটে চলে গেল। ছঙ্কু ধড়মড় করে উঠে বসলো। অমিত বললো, ‘কি হলো রে’? ছঙ্কু বললো, ‘কে ছপ ছপ করে হেঁটে গেলো’? অমিত উত্তর দিলো, ‘ও কিছু নয় গঙ্গার ঢেউ এসে ঘাটে ধাক্কা মারছে তাই ওরকম আওয়াজ হচ্ছে, শুয়ে পর’। ছঙ্কুর সারারাত প্রায় ঘুম হলোই না। ওদিকে অমিত অঘোরে ঘুমোচ্ছে, এদিকে নানা রকমের আওয়াজে তার বুক ধড়ফড় করে উঠছে। মাঝরাতে একদল লোক একটা মড়া নিয়ে শবদাহ করতে এলো। তারই মধ্যে কখন বোধহয় একটু ঘুমিয়ে পরেছিলো ছঙ্কু, ঘুম ভাঙ্গলো অমিতের ডাকে। গঙ্গার জলে ভোরের সূর্যের রক্তিম আভায় ছঙ্কু মুগ্ধ হয়ে গেল। সেদিন সকালেই সে বাড়ি ফিরে এলো, আর সন্ধ্যেবেলা প্রায়দিনের মতো অমিতের বাবা এলেন ছঙ্কুদের বাড়িতে। ছঙ্কুকে বললেন, ‘কি রে তুই নাকি অমিতের ওখানে গিয়েছিলি, তা কি বললো ও’? ছঙ্কুর মুখে সব কথা শুনে অমিতের বাবার তো চোখ কপালে, ‘কি, রাতে শ্মশানে শুতে যায়’! মনে মনে ভাবলেন ভুলটা তাঁরই, অমিতকে তিনিই বাগে আনতে পারেন না, অমিতের দাদু দিদিমা কি করে পারবেন? পরের দিনই তিনি গিয়ে অমিতকে নিয়ে চলে এলেন। অমিতের হলো মহা ফুর্তি। আবার গ্রামের বন্ধুরা, আবার সেই হৈ হল্লা। দেখতে দেখতে শীতকাল এসে গেল, আর শীত পড়তেই গ্রামে শুরু হলো ছিঁচকে চুরি। লোকের এঁটো বাসন থেকে ভাঙা বালতি, কিছুই বাদ দেয়না চোর। গ্রামের লোক অতিষ্ঠ। অমিতরা রাত পাহারা শুরু করলো। একরাতে প্রবল ঠান্ডা পরেছে। অমিতরা পাহারা দিতে দিতে হঠাৎ দেখলো বিজে ঘোসের বাড়ির পাঁচিলের পাশ থেকে একটা লোক বেড়িয়েই আবার লুকিয়ে পড়লো। যেন তাদের দেখেই লুকিয়ে পড়লো। অমিতরা আস্তে আস্তে গিয়ে যেই লোকটাকে ধরেছে, লোকটা বলে উঠলো, ‘আমি চুরি করিনি’। ব্যাস আর যায় কোথায়? সবাই তো এই মারতে যায় সেই মারতে যায়। ‘চুরি করনি মানে, আমরা বলেছি তুমি চুরি করেছো? আমাদের দেখে লুকোলে কেন? বাড়ি কোথায়? কার বাড়িতে চুরি করতে ঢুকেছিলে’? আরও হাজার প্রশ্ন। লোকটা কিছুই বলেনা, খালি ‘আমি চুরি করিনি’। সবাই মারতে যায় আর অমিত সবাইকে আটকায়। শেষে ছকু বললো, ‘ঠিক আছে মারবো না, আমি ওর অন্য ব্যবস্থা করছি’। এই বলে ছকু লোকটাকে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে ফেললো সামনের পুকুরের জলে। ওই প্রবল ঠান্ডায় জলে পরেই লোকটা হিহি করে কাঁপতে লাগলো। ছকু আর উদ্দিন মিলে লোকটাকে একবার ডোবায় আর তোলে,আর বলে, ‘কোথায় চুরি করেছিস বল’? লোকটা কিছুই বলে না খালি কাঁপতে থাকে। অমিতের খুব খারাপ লাগলো ব্যাপারটা। সে একরকম চেঁচামেচি করেই লোকটাকে জল থেকে টেনে তুললো। কিন্তু ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে। লোকটার কাঁপুনি বন্ধ হয়ে গেছে, দাঁতে দাঁত লেগে অজ্ঞান। এইবার ভয় ধরলো সবার মনে। ঠান্ডায় মরে গেল নাকি লোকটা! অমিত বললো, ‘এক মুহুর্ত দেরি করিস না, এক্ষুনি বাবার কাছে নিয়ে চল’। সবাই মিলে লোকটাকে কাঁধে তুলে ছুটলো অমিতদের বাড়ি। বাড়ির রোয়াকে লোকটাকে শুইয়ে অমিত তার বাবাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে নিয়ে এলো। তিনি সব শুনে, তাঁর ডাক্তারি চোখে দেখেই বুঝলেন লোকটার অবস্থা ভালো নয়, বললেন, ‘একে এক্ষুণি গরম করতে হবে নাহলে বাঁচাতে পারবে না, সবকটা খুনের দায়ে জেলে যাবে’। অমিতদের তো আক্কেল গুড়ুম, চোরকে গরম করবো কি করে? বুদ্ধিটা অমিতের মাথাতেই এলো। বাড়ি থেকে এক বোঝা খরের কুঁটি নিয়ে এসে তাতে আগুন ধরিয়ে তার উপর দুলিয়ে দুলিয়ে চোর সেঁকা চলতে লাগলো। একবার অমিত হাতদুটো ধরে তো উদ্দিন পাদুটো, আবার ছঙ্কু পা ধরে তো ছকু হাত। যেন চিকেন তন্দুরির মতো চোর তন্দুরি। এইভাবে কিছুক্ষণ চলার পর চোখ মেললেন চোরবাবু, আর চোখ খুলেই তিনি বললেন, ‘আমি একটা বিড়ি খাবো’। তারপর স্বীকার করলো ঘোসেদের বাড়ি থেকে কাঁসার বাসন চুরি করে ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে রেখেছে। সবাই বললো ওকে থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হোক। অমিতের বাবা ধমক দিয়ে বললেন, ‘সবাই জেলের ঘানি টানা থেকে বেঁচে গেছ, ওকে পাঁচটা টাকা দিয়ে বিদেয় করো’।

Loading

One thought on “গল্প- অমিতের কীর্তি

Leave A Comment